সুনামগঞ্জ, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুস শহীদ বলেছেন, হাওরের বোরো ধান ঝুঁকিপূর্ণ। বিগত সময়ে দেখেছি, বন্যার কারণে হাওরের বোরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষের কিছুই ছিল না। সেজন্য, হাওরের ফসলকে ঝুঁকিমুক্ত করতে বর্তমান সরকার বহুমুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পাকা ধান যাতে দ্রুত কৃষকের ঘরে তোলা যায়, সেজন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে ধান কাটার যন্ত্র জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার প্রদান করে যাচ্ছেন।
আজ শুক্রবার সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার দেখার হাওরে বাহাদুরপুর গ্রামে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত বোরো ধান কর্তন উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
কৃষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, হাওরে যেহেতু ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে, কাজেই আপনারা আগাম ও স্বল্পজীবনকালীন জাতের ধান চাষ করুন। তাছাড়া, আমাদের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধান, যেগুলোর উৎপাদন অনেক বেশি, সেগুলো চাষে এগিয়ে আসুন। বন্যা মোকাবিলা করে ফসল উৎপাদন যাতে চালিয়ে যেতে পারি সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ধানের দাম নির্ধারণের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ধানের দাম নির্ধারণের জন্য দুদিন পর আমাদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান সেদিকে খেয়াল রাখব। আমরা চাই কৃষকেরা যাতে ধান চাষে উৎসাহিত হন, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে।
তিনি বলেন, প্রকৃত কৃষকেরাই যেন সঠিক দামে ধান বিক্রি করতে পারেন, সে দিকে কঠোরভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। ধানের দামে যেন মধ্যস্বত্বভোগী কেউ সুবিধা নিতে না পারেন। ধান বিক্রিতে যেন কোনো সিন্ডিকেট তৈরি না হয়, সে জন্য ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এমএ মান্নান, সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাদিক, সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সুনামগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জানান, এই মুহূর্তে সুনামগঞ্জে এক হাজারের বেশি কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা চলছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৮৫৫ হারভেস্টার ও অন্য জেলা থেকে নিয়ে আসা ২০০ হারভেস্টার রয়েছে। এছাড়া, এবছর ব্রি ২৮, ব্রি২৯ ধানের চাষ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এর আগে মন্ত্রী কৃষকদের মধ্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করেন।